ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​বিদ্যুৎ-জ্বালানিকে সেবাখাত ঘোষণার দাবি ক্যাবের

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ০৫-১২-২০২৪ ০৬:৪৮:১৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৫-১২-২০২৪ ০৬:৪৮:১৪ অপরাহ্ন
​বিদ্যুৎ-জ্বালানিকে সেবাখাত ঘোষণার দাবি ক্যাবের
আগের সরকারের সঙ্গে আমরা রাস্তায় মুখোমুখি হয়েছি। বর্তমান সরকারের সঙ্গে থেকে, পাশাপাশি থেকে, পিছে পিছে থেকে চলতে চাই। কিন্তু সরকারের কিছু কর্মকাণ্ড বিশেষভাবে ব্যথিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ক্যাবের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. শামসুল আলম।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ক্যাব আয়োজিত জ্বালানি খাত সংস্কার শীর্ষক গণমাধ্যমের সঙ্গে সংলাপে তিনি মন্তব্য করেন।
শামসুল আলম আরও বলেন, এই সরকার এসে প্রথম দিনেই যে কথা বলতে পারত, এখনও বলতে পারে। বলা উচিৎ-বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত ব্যবসা করবে না। এই খাত হবে সেবা খাত। সরকার না ঘোষণা দেওয়ায় হতাশ হয়েছি। শেষ দিন পর্যন্ত তারা বলবে কিনা সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রধান দাবি হচ্ছে বিদ্যুৎ জ্বালানিকে সেবাখাত ঘোষণা দিতে হবে। এখানে মুনাফা করা যাবে না। বিদ্যুৎ দিতে হবে কস্ট প্রাইস (না লাভ না লোকসান) ভিত্তিতে। ব্যবসা ও মুনাফা করার কোনও সুযোগ নেই। কোম্পানিগুলো বিশাল অংকের মুনাফা করছে, তারা প্রফিট বোনাস নিচ্ছে, আর তার দায় চাপানো হচ্ছে ভোক্তাদের কাঁধে।
তিনি বলেন, সরকারের কিছু কর্মকাণ্ডে আমাদের আতঙ্কগ্রস্ত করেছে। বিশেষ করে দায়মুক্তি আইন (বিশেষ বিধান আইন) ও বিইআরসি আইনের বিষয়ে যেভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাতে হতাশ হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আমরা চোরের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি। যেসব আমলারা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কাজ করেছেন সেই মুখগুলোকেই ঘুরে ফিরে দেখা যাচ্ছে। এতে করে আগের ধারাবাহিকতা দেখা যাচ্ছে। এখনও মন্ত্রণালয় জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ করবে কেন? কেন বিইআরসির হাতে ছেড়ে দেওয়া হয় না?
এ সময় তিনি বলেন, আমাদের জ্বালানি খাতে বুভূক্ষু অবস্থা বিরাজ করছে, উৎপাদন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি রয়েছে, দাম বাড়ালে আরও বেড়ে যেতে পারে। আমাদের সমস্যা হচ্ছে একটি লুণ্ঠন গ্রুপ তৈরি হয়েছে, তারা লুণ্ঠন করে যাচ্ছে। এই লুণ্ঠন প্রতিহতের প্রধান অন্তরায় ছিল সরকার। তার অধিনায়ক পালিয়ে গেছে। এখন তো ন্যায়বিচার আশা করতেই পারি। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে শঙ্কা বাড়ছে।
বর্তমান সরকারের কাছে জনগণের দাবি হচ্ছে, ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির আমদানি, উৎপাদন, সঞ্চলন, পরিবহন ও বিতরণে প্রকৃত ব্যয় এবং লুণ্ঠনমূলক ব্যয়ের পরিমাণ অবিলম্বে নির্ধারণ করতে হবে। জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিত করার মাধমে জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা সংরক্ষণের লক্ষ্যে লুণ্ঠনমুক্ত ব্যয়ে ভোক্তার বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসেবা পাবার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ ২০২৪ এর ২(২)(ক) ও (খ) ধারা বাতিল, পেট্রোলিয়াম পণ্যসমূহসহ সকল এনার্জির সকল পর্যায়ের ব্যয়হার ও মূল্যহার গণশুনানির ভিত্তিতে বিইআরসি কর্তৃক নির্ধারণ, ২০১২ সাল থেকে পেট্রোলিয়াম পণ্যের মূল্যহার নির্ধারণ সংক্রান্ত আটকে রাখা ৩টি প্রবিধান কোনওরকম পরিবর্তন না করে অবিলম্বে গেজেটে প্রকাশ, (ঘ) বিইআরসির চেয়ারম্যান, সদস্য এবং সরকারি কোম্পানি, সংস্থাসমূহের চেয়ারম্যান, সদস্য ও শীর্ষ পদসমূহে নিয়োগ প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে করার লক্ষ্যে এক বা একাধিক প্রবিধান প্রণয়ন, বিইআরসি আইন সংস্কার এবং (ঙ) সেই সঙ্গে বিদ্যমান ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৮ ওবিইআরসি আইন ২০০৩ এর আওতায় জ্বালানি অপরাধিদের বিচার করতে হবে।
অধ্যাপক ড. তানজীমউদ্দিন খান বলেন, সরকার, আমলাতন্ত্র ও ব্যবসায়ী মিলে একটি অলিগার্ক শ্রেণি তৈরি করা হয়েছে। রাষ্ট্রের প্রয়োজন সেখানে গুরুত্ব পায়নি, প্রকল্প নেওয়া হয়েছে যেখানে টাকা পাচারের সুযোগ রয়েছে। টেকসই উন্নয়নের বিষয়টি উপেক্ষিত থেকেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সম্পাদিত চুক্তিগুলো প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, চুক্তিগুলো পাবলিক করুন, তারপর জনগণ দেখুক তারা কি করেছে।
আলোচনায় সাংবাদিকদের মধ্যে অংশ নেন ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ'র চেয়ারম্যান শামীম জাহাঙ্গীর, নির্বাহী পরিচালক সেরাজুল ইসলাম সিরাজ (বার্তা২৪.কম) শাহনাজ বেগম (অবজারভার), ছদরুল হাসান (ইউএনবি) মহিউদ্দিন নিলয় (প্রথম আলো) মুজাহিরুল হক রুমেন (একাত্তর টিভি), রিশান নসরুল্লাহ (বাংলাভিশন), এমএ নোমান (এনটিভি অনলাইন)। শুভ কিবরিয়ার সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. হুমায়ুন কবীর ভূইয়া।


বাংলাস্কুপ/ ডেস্ক/ এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ